Friday 12 February 2016

Asylum (বাংলায় টাইপ করতে পারিনি)



-পারমিতা কে মনে আছে?
-কে পারমিতা?
-সেই যে সেবার চড়কের মেলায়‚আলোহীন‚শুনশান পথে হারিয়ে যায়!?
-না তো‚মনে নেই তো কিছু।
-মনে করুন‚নীল জ্যোত্‍স্না! মনে করুন কোমড়ে জড়ানো ওড়না!
কাঁখে কলসি‚দু'পায়ে নুপুর-
-চিনি না আমি চিনি না এরকম কাউকে।
-যে মেয়েটার একটা বিকেল রঙা শাড়ি ছিল‚নিস্তব্ধ দুপুরে বাসন
মাজতে যেত পুকুরপাড়ে‚ চন্দন কাঠের গন্ধ আসত নগ্ন পিঠ থেকে‚
হলুদ বাটার শব্দে মিশে থাকত রঙিন চুড়ি..
-আমি শুনিনি এমন শব্দ..
-যে মেয়েটা রাজুকে ভালোবাসত‚ বলেছিল ঘর বাঁধবে রানাঘাটে
গান্ধীপাড়ায়‚ বলেছিল কুমড়ো ফুলের বড়া আর ভাত‚
বলেছিল...
-বলেছিল...আরো অনেক কিছু বলবে বলেছিল‚হানিমুনে দীঘা‚
বলেছিল ক্লার্কের চাকরিটা পেয়ে গেলে কেল্লাফতে‚তারপর মাসকাবারি‚
পরিবার‚ চাবির গোছা‚ গান্ধীপাড়ায় বাড়ি‚দোতলা‚নিউ মার্কেট...
-আর?
-বলেছিল...আরো বলেছিল জানেন। মনে পড়ছে না স্যার্। মাথায়
লাগছে খুব...
-চেষ্টা করুন। আর একটু মনে করার চেষ্টা করুন..
-একদিন তারপর পারমিতা পালপাড়ার ঘোষদের বাড়ির বউ
হয়ে গেল। ওর বিয়ের দিন ওদের বাড়ির সামনে কত মানুষ‚
পাঞ্জাবি-সালোয়ার‚খাবারের গন্ধ‚সানাই। পারমিতা হাসছিল...
পারমিতা হাসছিল...আমি ওর হাসির শব্দ শুনেছি...ওর তো এভাবে
হাসার কথা ছিল না!
-আপনার রাগ হয়নি?
-রাগ??...কি জানি। পারমিতার হাসি দেখে ঠিক রাগ হয়নি। কিন্তু
ওর বর ওর বুকের দিকে তাকিয়েছিল...পারমিতা বলেছিল ওর
বুকে আমায় স্বর্গ দেবে...আমি তো স্যার শ্মশানের দালাল। ওই লাইন
করা‚খাট তুলে দেওয়া‚ওসব করি। নিজের হাতে মানুষকে স্বর্গে পৌঁছে
দিই। আমাদের তো ওসব স্বর্গ টর্গ নেই স্যার‚আমরা শুধু স্বর্গের দরজায়
দাঁড়িয়ে থাকি। এপারে আমরা ওপারে যম। তাও স্যার চলে যেত...
কিন্তু পারমিতার বাবাটা ঝামেলা করে দিল...মাথায় লাগছে খুব..আহ্‍
কিন্তু পারমিতা হাসছিল স্যার জানেন...পারমিতা হাসছিল..
আচ্ছা স্যার মালতীকেও একদিন শ্মশানে আসতে হবে তাই না?
-নিশ্চয়ই হবে। সবাইকেই আসতে হয়।
-ঠিক বলেছেন। আসতেই হবে ওকে। তাই তো স্যার রানাঘাটের
জুতোর দোকানের কাজটা পেয়েও ছেড়ে দিলাম। এখানেই এই শ্মশানেই
অপেক্ষা করবো। আসতে ওকে হবেই..চুল্লিতা ঢোকানোর আগের সময়টুকু
শুধু ওর আর আমার...তখন ওকে বলবো হাসলে তোমায় হেব্বি
লাগে পারমিতা...