Sunday 23 April 2017

রেমন্ড জে সেগার তাঁর “প্ল্যাঙ্ক,ফিজিসিস্ট”1 প্রবন্ধ শুরু করছেন এমনভাবে যা পড়ে মনে হয় হয়ত আকস্মিকভাবেই প্ল্যাঙ্ক একজন পদার্থবিদ হয়ে গেলেন,যিনি আদৌ কোনোদিন ভাবেননি বিজ্ঞানের মাধ্যমে সমগ্র বিশ্ব চমকে দেবেন।“দ্য সেকেন্ড ক্রিয়েশনঃমেকার্স অফ দ্য রিভলুশন ইন টুয়েন্টিন্থ সেঞ্চুরি ফিজিক্স”2 গ্রন্থে প্ল্যাঙ্ককে কনসারভেটিভ বৈজ্ঞানিক বলা হচ্ছে,এর সঙ্গত কারনও আছে।যারা জে এল হিলরনের “ডিলেমাস অফ অ্যান আপরাইট ম্যান” পড়েছেন তারা হয়ত রোববার দুপুরে তর্ক জুড়তেই পারেন প্ল্যাঙ্ক কতটা ঝুঁকেছিলেন ধর্মের দিকে। যেখানে গুগল সার্চ করলে ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ককে দশটার মধ্যে অন্তত তিনটে ওয়েবসাইট থাকবে যেখানে আদ্যপান্ত ধর্মীয় মানুষ হিসেবে দেখানো হবে সেখানে আদৌ কতখানি তর্কের জায়গা আছে তা নিয়ে সংশয় থাকতেই পারে,কিন্তু তবু কেন তর্ক করবো যে ওই যুগে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হয়েও প্ল্যাঙ্ক একজন স্বতন্ত্র মানুষ ছিলেন তার একটা কারন বলি। সেগারের প্রবন্ধে এক জায়গায় প্ল্যাঙ্কের সাথে চার্চের বিরোধের একটা তথ্য দেওয়া আছে,যা থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় প্ল্যাঙ্ক ধর্মে বিশ্বাসী হলেও তাকে একদমই অন্ধভক্তিতে পরিণত করতে চাইতেন না। এ কেমন কথা হল?এই ব্যাপারটা কেমন তা একটু পরিষ্কার করি।দার্শনিক অরিন্দম চক্রবর্তী “বইয়ের দেশ” এ একবার এক সাক্ষাৎকারে3 সুমন সেনগুপ্তকে বলেছিলেনঃ “তুমি মার্ক্সের মধ্যে তত নাস্তিকতা পাবে না,যতটা তুমি সংস্কৃতে পাবে।এসব জানা দরকার।সেসব জেনে আস্তিক হও। বন্ধুবর শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায়-আস্তিক কাকে বলে? কাকে বলে নাস্তিক?-এ নিয়ে চমৎকার প্রবন্ধ লিখেছেন......আমি তো ঈশ্বর মানি।কিন্তু আমি এসবও জানি।ফলে আজ যদি একজন নিরীশ্বরবাদী কেউ আমার সামনে আসেন,আমার তাঁকে দেখে ভয় করে না......বরং আমি তাকে ওয়েলকাম করি।তার কারণ,আমি তাঁদের দিকের যুক্তিটাও জানি।” আমার মতে এ ধারণা বোধহয় ক্ষতিকারক নয়,তর্ক থাকতেই পারে বা তর্ক থাকাটাই স্বাভাবিক,কিন্তু সেই যুগে প্ল্যাঙ্কের কয়েকটি কাজ এবং বক্তব্য আমাকে ভাবতে বাধ্য করায় যে উনি অন্ধভক্ত ছিলেন না,এবং শুধুমাত্র হাইলাইট করা বক্তব্যগুলোয় আমি মানুষটিকে বিচার করতে রাজি নই।মনে রাখা প্রয়োজন প্ল্যাঙ্ক এবং বর্ন-হেবার সাইকেলের আবিষ্কারক ফ্রিৎজ হেবার ১৯২০ র অক্টোবরে “ইমার্জেন্সি অর্গানাইজেশন অফ জার্মান সায়েন্স” প্রতিষ্ঠা করছেন,যা বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে লিপ্ত হয়, ঠিক এই সময় ওয়েস্ট জার্মানিতে নার্নস্ট আর রুবেন যারা জেমস চ্যাডুইকের শিক্ষক ছিলেন,রুহ্‌বেন ডিটেনশন ক্যাম্পে ছাত্রদের ল্যাব তৈরির জন্য লড়ছেন যুদ্ধপরবর্তী সময়ে।4মজার ব্যাপার এই মানুষটাই নাকি ১৯২০ থেকে আমৃত্যু এক চার্চের ওয়ার্ডেন ছিলেন।

কোয়ান্টাম স্টোরিঃ ১৮৯০ এর শেষদিক থেকে মোটামুটি ছ’বছর ম্যাক্স গবেষণা করেছেন আলো বিকিরণের ওপর।তাদের গতিপ্রকৃতির ওপর।১৮৯৪ এর পর তার আগ্রহের তালিকায় প্রবেশ করছে “ব্ল্যাক বডি রেডিয়েশন”, তার দুবছর পর ১৮৯৬ এর ৭ই জানুয়ারি পঁয়েকার একজনের ভাঙা হাতের এক্সরে ফোটোগ্রাফ পান ডাক মারফত,ছবিগুলো পাঠিয়েছেন উইলহেম কনরাড রন্টজেন,যিনি আবিষ্কার করে ফেলেছেন এক্সরে।সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ,জে জে থমসন নামক একজন ইংরেজ বিজ্ঞানী সম্ভবত ক্যাভেন্ডিশ ল্যাবরেটরিতে ঠিক এই সময় আবিষ্কার করেছেন এক নতুন জিনিস, “ইলেক্ট্রন”।১৯০০ সালের ১৪ই ডিসেম্বর জন্ম নিচ্ছে “চাইল্ড অফ দ্য সেঞ্চুরি”- “কোয়ান্টাম”। কেমন ছিল আবিষ্কারের দীর্ঘ পথ? ১৯১৮ সালে স্টকহোমে নোবেল পুরষ্কার নিতে উঠে ম্যাক্স বলছেনঃ “Looking back over past twenty years to the time when the  idea of the physical quantum of  action and the measurement of it, first emerged into definite shape from a mass of experimental facts, and looking back beyond that over the long and labyrinthine path of which finally led to the discovery.”কোয়ান্টাম থিওরি পদার্থবিদদের এতটাই নাড়া দিয়েছিল যেন প্ল্যাঙ্ক এপিমেথিউসের মত কোনো এক প্যান্ডোরার বাক্স খুলে দিয়েছিলেন,খুলে দিয়েছিলেন এক নতুন পথের দিশা।কিন্তু মজার ব্যাপার প্ল্যাঙ্ক নিজের থিওরি নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না,ভাবনা চিন্তার পর তিনি আরো অপছন্দ করতে শুরু করলেন এই নতুন আবিষ্কারকে। কোয়ান্টাইজড শক্তির কথা তার একটু খটকা লাগছিল,কারন তিনি কিছুতেই নিজেকে প্রমান করতে পারছিলেন না। প্ল্যাঙ্কের মৃত্যুর পর তাঁর ছাত্র জেমস ফ্রাঙ্ক বলেছেন তিনি ক্রমাগত বিভিন্ন পদ্ধতিতে প্রমান করার চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন,এমনকি একসময় তিনি কোয়ান্টাম থিওরিকে পাশে সরিয়ে রাখার চেষ্টাও করেন,কিন্তু অবশেষে তিনি স্বীকার করেন এবং প্রমান করেন কোয়ান্টাইজড শক্তির তত্ব। কিন্তু এই তত্ব যে ছড়িয়ে পড়বে বিভিন্ন শাখায় তা নিজেও মেনে নেন। কিভাবে ছড়িয়েছিল তা?আইনস্টাইন যখন ফোটন কণার ব্যাখ্যা দিলেন তখন কোয়ান্টাম থিওরি তাকে দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত করল। চার্লস ম্যান এবং রবার্ট ক্রিজ মজা করে বলেছেন হয়ত কোয়ান্টামের আবিষ্কারকের থেকেও বেশি জরুরীভাবে এই থিওরিকে গ্রহণ করেছিলেন আইনস্টাইন। তাই জেমস মার্ফি প্ল্যাঙ্কের “হোয়্যার ইস সায়েন্স গোইং”5 অনুবাদ করার পর যখন ১৯৩২ নাগাদ এক সাক্ষাতে আইনস্টাইনকে অনুরোধ করেন তার বইয়ের ভূমিকা লিখে দিতে তখন বিনয়ী অ্যালবার্ট বলেন যে কোয়ান্টাম থিওরির আবিষ্কারকের মনে হয়না তাঁর মত “লেসার লুমিনারি অব্জেক্ট” দ্বারা আলোকিত হওয়ার দরকার আছে। আবার আইনস্টাইনের রিলেটিভিটি যখন বেরচ্ছে তখন সমগ্র বিশ্বে যে গুটিকয় মানুষ তার গুরুত্ব অনুধাবন করতে পেরেছিলেন তাদের মধ্যে একজন ছিলেন ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক। অবশ্য এই আন্তরিকতার কারন যে শুধুমাত্র পারস্পরিক পিঠ চাপড়া চাপড়ি নয় তা বলাই বাহুল্য।
শেষ করব এক বাঙালির কথা দিয়ে। ১৯২৪ সালে সত্যেন্দ্রনাথ বোস যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্সের অধ্যাপক তখন ক্লাসিক্যাল ফিজিক্সের সাহায্য ছাড়া প্ল্যাঙ্কের রেডিয়েশন ল এর ওপর একটা পেপার লেখেন।উনি যে পথে এই কাজ করলেন তাকে আমরা এখন কোয়ান্টাম স্ট্যাটিস্টিকস নামে চিনি!

টীকাঃ
1.http://www.asa3.org/ASA/PSCF/1985/JASA12-85Seeger2.html
2.The second creation: Makers of the revolution of Twentieth century Physics by Robert P. Crease and Charles C. Mann
3.জুলাই-সেপ্টেম্বর ২০১৪ সংখ্যা।অরিন্দম চক্রবর্তী সাক্ষাৎকার
4.Brighter Than A Thousand Sun  by Robert Jungk
 5.Where the science is going by Max Planck
Translated by James Murphy

শুভ জন্মদিন ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক!

Wednesday 1 February 2017


স্টাডিরুম নয়,চিলেকোঠা থেকে বলছি 


ইদানীং জানলার পাশে বিকেল পড়ে আছে দেখলে আমার খালি মনে হয় আমরা কি সিরিয়াল দেখতে দেখতে ক্রমশ একটা সিরিয়ালের সংসারের ভেতর ঢুকে যাচ্ছি?হ্যাঁ সিরিয়ালেই তো সংসারে কালো মেঘ নেমে আসতে দেখানোর হলে গোধূলি দেখায়......আমাদের বসার ঘরে আমরা গরম দুপুরেও কার্পেট পেতে রাখছি শুধুমাত্র গেস্ট আসবে বলে?(আমরা এখন অতিথি বলি না)ছোটো কাকিমার সেজো ভাসুরের ছেলেকে আমরা নাটের গুরু ভাবছি সাংসারিক ঝামেলায়?ভাইয়ে ভাইয়ে বিবাদ লাগলে আমরা বলছি মহাসোমবার!অতঃপর আমরা স্টেডিয়ামের বাইরে দাঁড়িয়ে “আইপিএল...আইপিএল” করে চেঁচাচ্ছি,ফলত,প্রতিটা সংসারে তৈরি হচ্ছে নিত্যনতুন চিত্রনাট্য।আর যেহেতু চিত্রনাট্যের বাজার এখন গরম,তাই টিআরপির’ হিসেবে প্রতিটা সংসার এখন হিট। কোনো ব্যাকস্টোরি নেই তাও আমার মনে হয়,বছর তিরিশ আগেও,আবাসনের জানলাগুলোয় বোরিং সংসার থাকত,কোনো গল্প ছাড়াই এক একেকটা সংসার একদিন বদল হয়ে যেত একটার পর একটা ভাড়াবাড়িতে..প্রায় প্রত্যেকটা বাড়িতেই মিশে থাকত একটা ধকল,অ্যাডজেস্টমেন্টের ধকল। আর তাই আমরা এখনও কখনও কখনও চা বা কফির আড্ডায় শুনতে পাই গল্প শুরু হয়-‘আমরা যে পাড়ায় থাকতাম’...কত কত্ত পাড়া এভাবেই হারিয়ে যাচ্ছে বিকেলের পড়ন্ত রোদের ক্রিকেট খেলায় শেষবেলার দু’ বলে চারের ভেতর। “ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানী” সিনেমায় একটা ডায়ালগ ছিলো-‘...বিত্‌তা স্যময়,অউর খর্চ হাম হোতে হ্যায়...’-হ্যাঁ ব্যাপারটা মিথ্যে কি?সত্যিই তো একের পর এক পরত সরতে সরতে আমরা ক্ষয়ে যাচ্ছি সময়ের স্রোতে।কিন্ত তবু...

চোখ বুঝলে দেখছি...একটা নাড়ুর বয়ামে ঢুকে পড়েছি,বাইরে আমার হিন্দী টিচার ঠাকুমা সিরিয়ালে পটল দেখতে দেখতে চেঁচাচ্ছে –বোওওউমাআআ...দেখো ছেলেটা নাড়ু খেতে কি ভালোবাসে...মা,রুটির চাটুর ওপর গরম খুন্তিটা রেখে দৌড়ে এসে বলছে-দেখেছো,ওরে পেট কামরাবে...আমি বয়ামের দেওয়ালে ঠোক্কর খেয়ে ফিরে ফিরে আসছি একই বিন্দুতে,যেভাবে সমস্ত মানুষ অফিস ফেরতা ঘরে ফিরে আসে ক্লান্ত শ্রমিকের মত...সমস্তকিছু এত ছোটো যে বারবার চেনা জিনিস দেখতে দেখতে ভুলে যাচ্ছি অচেনার ফারাক...এরইমধ্যে জেঠু অফিস থেকে ফিরে আসছে হাতে ফুলের প্যাকেট,তাতে গাঁদা ফুলের মালা আর কুঁচো ফুল...আমাদের গ্যারেজঘরে সাইকেল তুলে দিয়ে লাল রক দিয়ে হেঁটে আসার সময় আমার কংগ্রেস করা জেঠুকে পরাজিত সৈনিকে মত লাগে...।জুতো খুলতে খুলতে জেঠু ক্লান্তিতে নুইয়ে পড়ছে,আর আমি শুনতে পাচ্ছি ঘরের ভেতর থেকে বড়মা বলে উঠছে-কমপ্ল্যানটা এনেছো?...বয়ামের দেওয়ালগুলো এত মসৃণ যে আমি স্লিপ খেয়ে নেমে আসছি বারবার...ঠিক যেমন ছোটোবেলায় স্লিপ খেতাম পার্কে...দাদু হাত ধরে নিয়ে যেত পার্কে...তখন ফেরার পথে ছ’ফুট লম্বা দাদুর কাঁধের ওপাশে সূর্য ডুবে যেত...দাদু ফেরার পথে দাঁড়িয়ে পড়ত চপের দোকানে...ফুলুরি...আলুর চপ...কতরকম অপশন...তারপর ধীরে ধীরে মানুষের জীবন যেরকম এমসিকিউ এর চারটে অপশনে বন্দী হয়ে যায়,সেরকমভাবেই আমার গোঁফ গজালো...বয়ামের মেঝেতে দুড়ুম করে ঠোক্কর খেলুম,টন টন করছে মাথাটা...ঠিক এইসময় বাথ্রুম থেকে বেরিয়ে জেঠু খাদির  পাঞ্জাবী পড়ে বেরোলো পার্টি অফিসের দিকে...তারপর একটা পর একটা মিছিলে আর পাঁচটা পাঞ্জাবী পড়া পার্টিকর্মীর মত মিশে যেতে লাগলো...জেঠুর গলার স্বর স্লোগানে স্লোগানে ভেঙে যেতে লাগলো...আর তারপর সন্ধ্যে নেমে আসতে লাগলো আমাদের দেড়শো বছরে পুরোনো বাড়ির চুনসুরকির দেওয়ালে দেওয়ালে...শাঁখের আওয়াজে ভেসে যেতে লাগলো আমার হোমওয়ার্কের সন্ধ্যে...এরইমধ্যে হঠাতই দিদি বেরিয়ে এলো একটা টেডি বিয়ারের কোলের ভেতর থেকে,এসে বলল-রান্নাবাটি খেলবি? আমি ভ্যাবলার মত ফিকফিক করে হাঁসলাম...এখন দেখতে পাচ্ছি দিদি বয়ামের বাইরে থেকে আমাকে দেখতে পেয়েছে কিন্তু যেহেতু এখন আমাদের আর জেঠুদের মাঝে বর্ডার বর্ডার সিজন চলছে,তাই দেখতে পেয়েও দিদি বেরিয়ে যাচ্ছে ফোন বাজছে বলে...আমি জানলার দিকে তাকিয়ে দেখছি দিদির মত হাজার হাজার কমলা সালোয়ার পরা মেয়ে কানে ফোন নিয়ে হেঁটে যাচ্ছে কোচিং কলেজের দিকে...দাদুর দম দেওয়া ঘড়িতে ১১ টা বাজলে বাবার বাইকের শব্দ শুনতে পাই...বাইকের ওপর বাবা একটু একটু দুলছে...বাবার চোখের দিকে তাকিয়ে মা কড়া নজর দিয়ে ফিরে যাচ্ছে ঘরের দিকে...আমি দেখছি বাবা বাইক তুলে দিচ্ছে আসতে আসতে...বয়ামের ভেতর এখন বদ্ধতা বাড়ছে...আমাদের বারান্দায় যে হলুদ ডিম লাইটটা জ্বলে তার ছায়ায় বাবাকে তেজি ঘোড়ার মত ফিরে আসতে দেখছি খাবার টেবলে...উঁহু টেবল নয়,আমরা বরাবর মাটিতে বসে আবু বাবু হয়ে খেতাম,পরের দিকে দাদুর হাঁটু ভেঙে যাওয়ার পর দাদু টেবলে বসে খেত...দাদু হঠাৎ বলে উঠছে-ইলিশটা কেমন? আমি,যে কিনা ইলিশ জন্মেও ভালোবাসতাম না,সে এখন দিব্যি চাপালজ্জায় ভাপা ইলিশ মেরে দিচ্ছি...দূরে কোথাও-‘...একদিন আপ ইঁউ হামকো মিল জায়েঙ্গে...’-বেজে উঠছে...প্যান্ডেলের পর প্যান্ডেলে নচিকেতার “বৃদ্ধাশ্রম” বেজে চলেছে সারা সন্ধ্যে...রাতের দিকে রফি চালাচ্ছে মাঝে মাঝে...একটা পর একটা নতুন গজানো এগরোলের দোকান ঝাঁপ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে...ঠাকুর দেখে ফিরে আসছে পরিবারএর পর পরিবার...সপ্তমীতে প্রত্যেকটা পাড়ায় মধ্যরাতের দিকে স্বস্তি নেমে আসে,কারন মা এখনও দিন তিনেক আছে...এছাড়াও পরেরদিন অঞ্জলী তাই পাড়ার সমস্ত যুবতী সেদিন লাল পাড় সাদা শাড়িতে ঈশ্বরী হয়ে উঠবে...অতএব ভোরের দিকে চারদিক ছেয়ে যাবে শুভ্রতায়...

আর আমরা জানি একটা পচা আপেলের ঝুড়ির ভেতর বাকিসব ভালো আপেল....কনসিকোয়েন্টলি একান্নবর্তী পরিবার ভেঙে উঠে পড়ছে ফ্ল্যাট...কর্পোরেশন যেহেতু ইস্তেহারে লিখেছে- যুদ্ধ নয় শান্তি চাইঐক্যই আমাদের লক্ষ্য....সেই অ্যাজেন্ডা অনুসারেই আবাসনে আবাসনে বৈচিত্রের মধ্যে ভারতবর্ষ গড়ে উঠছে...যেভাবে ক্ষতর ওপর থেকে ব্যান্ডেড তুলে নিইসেভাবে লেখার ভেতর থেকে লাইন তুলে নিয়েছি আর বাতিল সেলোটেপের মত ছুঁড়ে ফেলে দিতে গিয়ে হাতে পেঁচিয়ে উঠেছে ব্যাথা আর ঘরের কোনে আগুন...আগুন.....রাস্তার দু'ধারে যারা প্রতিবাদ করবে বলে এসে দাঁড়ালো তাদের আমি প্রায় পাখিপড়ার মত করে বুঝিয়ে বললাম যে আসলে সাম্যবাদ ছাড়া গতি নেই তাই অগত্যা বিপ্লবের দিকে এগিয়ে যাওয়ার এই মিছিলে লোক বাড়াতে হবে আরো..বাড়িয়েই যেতে হবে...একদিন সমস্ত মিছিল শুরুর দিক থেকে উবে যেতে যেতে শেষপ্রান্তে নুইয়ে পড়া যে লোকগুলোর সামনে এসে দাঁড়ালো তারা  জন্মে কোনোদিন মার্ক্স পড়েনি...তবু তারাই আজ দলবদলের খেলায় পার্টি বদলালো না...কিন্তু না আমি যে গল্পটা বলবো বলে শুরু করেছিলাম সেটা জ্যাকেটের ভেতর জমে যাচ্ছে...শীত শীত করছে তাও...বাবুঘাট থেকে অফিস ফেরতা টাইমে সমস্ত লঞ্চ স্বর্গের দিকে যায় বলে আমি সেই...একইরকম গতানুগতিক শহরে ফিরে আসছি...

এসে পড়ছি একটা কুম্ভীপাকের মধ্যে...নীল নীল কড়াইয়ের ভেতর ডুবে যাচ্ছে বেগুন ভাজা...লুচির গন্ধে ভরে যাচ্ছে আমাদের বাড়ি...মেঘলা আকাশের নীচে আমার জেঠু বিয়ে করতে যাচ্ছে দ্বিতীয়বারের জন্য...হ্যাঁ একদিন জেঠিমা কমপ্ল্যানে খেতে খেতে অনেকটা লম্বা হয়ে আকাশে উঠে পড়ল যেভাবে গল্পের গরুরা একদিন গাছে উঠে পড়ে ভেঙে পড়া বাসরের জানলায়সূর্যের প্রথম আলোয়...আর তারপর থেকে শুরু হয়ে যাচ্ছে হাইওয়ে..আমরা যাচ্ছি কালিপূজোর বাজি নিয়ে দাদুভাইয়ের বাড়ি...সেখানে কালিপুজো হয় প্রতিবার...দাদুর বাড়ি মফস্বঃলে...সেখানে জমিয়ে ঠান্ডা পড়ে...প্রচন্ড বাজির শব্দে আমরা পাঁজরে পাঁজর ঠেকে যাওয়ার শব্দ লুকিয়ে রাখছি ...অথচ নিজেরাই অস্থির হয়ে পড়ছি বাজির শব্দে...তবু আরো লুকোতে লুকোতে ঘুমিয়ে পড়ছে মন্ডপ..তুবড়ির জ্বলে যাওয়া খোল আমাদের সমস্ত দৃশ্যসুখের শান্তি নিয়ে উল্টে পড়ে আছে ঘাসে..রকেটের প্যাঁকাঠি উড়ে যেতে পারেনি যতদূর তার থেকে হয়ত বা সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে আমার মা বসন্তকুমারী কলেজ থেকে বেরিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বাস ধরবে বলে..আর আমার বাবা হয়ত কাছেইকল্যানিতে ফুটবলের খেপ খেলতে এসেছে....কিন্তু যেহেতু ফ্ল্যাশব্যাক সাদা কালোয় হয় আর অনন্ত তাই আমরা আড়াই চালে ঘোড়ার মত ফিরে যাবো জ্যাকেটের ভেতর সেই গল্পটায় যেটা চলছিল আসলে...

সেই শহরে আমরামানেআমি জেঠু দিদি জেঠিমা জেঠুর বন্ধু তার স্ত্রী আর মেয়ে বেরিয়ে পড়েছি ঠাকুর দেখবো বলে...অজগরের মত লম্বা লাইনের দাঁড়িয়ে পড়েছি দমদম পার্কে...অজগরটা খুব আস্তে আস্তে এগোয়তার পেটের ভেতর আমরা ঘেমে উঠি আমাদেরই তৈরি এয়ারকন্ডিশনের সামনে....এরপর কাঁচ ভাঙে কারন জীবন ফেড আউটের সুযোগ দেয় না কাজেই.....আমি বয়ামের ভেতর থেকে দেখি সকাল হয়ে গেছে-আর জয় গোঁসাই বলেছেন-সকাল হলেই যত সমস্যা....তাই আমরা সকালের বিউটি নিয়ে না কপচে দেখবো মা কোথায়?..? মা উঠে পড়েছে...আমি শুনতে পাচ্ছি মা নজরুন গীতি গাইছে গুনগুন করে....বয়ামটা এখন মৃত মানুষের মত ঠান্ডা...আমি প্রায় চেঁচিয়ে মা'কে বলতে যাবো মাআআ চাদরটা দাও..ঠিক তখনই আমারই বিছানা থেকে একটা আমার মত ছেলে আমার চেয়ে বছর পাঁচেকের বড়, উঠে এলোঠিক যে চাদরটা চাইতাম সেটা সরিয়েই...আমি প্রথমেই ঘাবড়ে যাই না কারন পাশাপাশি আর বড় বেশি কাছাকাছি থাকতে থাকতে আমরা এতটাই একে অপরের মত হয়ে পড়েছি যে নিজের মত মনে হয় অনেককেই....ফলত আমার এই কনফিউসনের সু্যোগ নিয়ে ছেলেটা আমার ব্রাশটা তুলে মাজতে শুরু করেছে বয়ামের একধার থেকে আর একধারে ছুটে বেড়ানো ছাড়া আর কিই বা করতে পারি আমি?



Friday 27 January 2017

মৃত্য সম্পর্কে একান্ত ব্যক্তিগত প্রেডিকশনসমূহ

অ্যান ওভারভিউ

আমাদের মৃত্যু মিছিলে সুলোচনা,কলকাতায় যদিবা জমে ওঠে ভিড়
ক্ল্যাসিক্যালে সূর্য্য ভাঙবে চাঁদের সংসার-
ডিনার টেবল ও তৎসহ এঁটো বাসনের পৃষ্ঠদেশে জমে ওঠে স্তব্ধতা,
নির্দেশহীনভাবে ঘুরে বেরানো দললছুট পিঁপড়ে এবং
আমাদের মৃত কামনারা অলিন্দ থেকে অলিন্দে দৌড়ে বেরাবে অহেতুক
ব্যস্ততায়।
বিছানার পর বিছনায়-বালিশে-গন্ধে-ঘামে,নীলকামড়ের
শীতল উরুদ্বয়,কুহকোজ্জল মিডিয়ায়-
আমাদের ডিজিটাল দূরত্ব বাড়বে পিক্সেলে,বাইটে,টিআরপিতে।
মৃত্যু মিছিলের দিন হ্যান্ডবিল বিলি করা হবে সোৎসাহে।
লেখা থাকবে-‘জীবন-মরণের জারি মহাযুদ্ধে ও কমরেড।
দ্যাখা হবে ফের ময়দানে’এবং ‘শেষে স্টার দিয়ে-না কেঁদে ওপরে দেখুন
হাই বলছি।
কুয়াশার কালিম্পং-এ বাঁক নিলেই এক ঝাঁক পরী দ্যাখা যায়,
হেসে ওঠে অচঞ্চল মিঠি কম্পনে।‘আমাদের মৃত্যু হোক ওরকম উত্তেজনায়’।
মনে পড়ে প্রায় চল্লিশ বছর আগে এক মেঘাবৃত নোটবুকে
এক “ফ্যান্টাসিময় কবি”-র লেখা লাইন-‘উৎপাটনও একটি কার্য-
এবার অনিচ্ছাকৃত আলেয়াটিকে গুরুত্ব দেওয়া হোক,কারন আজ থেকে তিরিশ-চল্লিশ বছর পরে প্রকাশ্য কার্যহীনতার উন্মত্ত নৃত্যবিনোদন আমাদের কাছে অসহ্য ঠেকবে।অবশ্য অপশন দু’টোই-‘নিলে নাও,না নিলে মিস’।

আ থট অ্যাবাউট ‘মোমেন্ট অব ক্লাউড’

উফ্‌,ওই রাস্তাটা বাঁ’দিকে,ওটাই মন্দারমনির দিকে যাচ্ছে,আমরা তবু দীঘা যাবো।
মধ্যবিত্ত ভ্রমনের তৃপ্তি ভিন্ন এবং স্বস্তিদায়ক। আসলে আমি বা ধরো আমাদের
জেনারেশনটা পার্টিকুলার্লি এক মোহনা-মাহেন্দ্রক্ষণের সাক্ষী্‌আমাদের কমবেশী
সবার একটা নিম্নমধ্যবিত্ত থেকে উচ্চ মধ্যবিত্ততে উত্তীর্ণ হওয়ার
এক গোপন কাহিনি আছে।তবুও বদলের যন্ত্রনাবোধের কথা –‘আজকালকার
জোর করে মনে রাখানোর’ তীব্র সংক্রমণের ফলশ্রুতি আমরা প্রতিরাতে
রোমাঞ্চিত হই।
-‘চেঞ্জ ইন দ্য টাইম অফ ব্লিঙ্ক’
‘যেকোনো দরজাই আমার কাছে অচেনা হয়ে যায়
যেকোনো শাড়ির পারে সিঁদুরের দাগ-
যেকোনো বালিশ কোনো সাক্ষ্য দেবেনা
যেকোনো শরীরে ঢোকে তিনকোণা প্লাগ’।

-In the Time of cloud and whisper
In the time of dispatch and desire
In the time of broken sword of the self
I don’t know,I don’t know….

That way along the fear of wings,
On the mountain of Kalimpong-
And the snake climbing up the road
I walked with joy and sorrow.

-উড়ো ভাবনার মত কেউ বলে উঠবে-
‘উও ভি কেয়া দিন থে,চঢ়াইয়ো মে জন্নত হোতা থা’

-‘পাহাড়বিষয়ক প্রবন্ধ’ তৎক্ষণাৎ বন্ধ রেখে উঠে

গ্যালো তরুন,সুলোচনা,আমাদের সময় এসেছে।  

Monday 23 January 2017

এই লেখাটির নাম ‘ঝরা পাতা’ দিলে বেটার হত

আমি তো দু’জন ক্যান্সার পেশেন্টের কথাই বলতে চেয়েছিলাম,ঠাকুরপুকুর ক্যান্সার হাসপাতালের এক কোনে দু’টো বেডে শুয়ে থাকে যারা অন্ধ শ্রমিকের মত।
অনেক রক্ত পচাগলা দেহের ওপর সাদা চাদর পাতা দু’টো বেড,বাস্তবিকই পরিচ্ছন্নতা দেখার মতন।
হ্যাঁ এখানেও একটা বেশ ফুরফুরে দুপুর নামে,নাইন্টিজে বলিউডে যেরকম দুপুর দেখাতো সেরকম ব্যাস্ত নয়,তবে রোদ্দুরটা ওরকমই লাগে। হিসেবমত জীবন তো একটা সিনেমাই। আবার সিনেমাও তো একটা জীবন। বাচ্চারা মুখে সবুজ রঙের মাস্ক পরে বোবা এঞ্জেলের মত ছুটে ছুটে যাচ্ছে ফুলের কাছে,ফুল কিন্তু ডিস্ক্রিমিনেশন করছে না,কারন ফুল ক্যান্সারের বুকের ওপর ফুটে ওঠার ধক রাখে।
“বন্দুকের নলই ক্ষমতার উৎস”-তা ক্যান্সারও বন্দুকের নলই,জীবনের দিকে তাক করা আছে,আদালতে দরজা খুলে গেলে ট্রিগার টিপে দেবে।
যখন আমার পিসতুতো ভাইকে দেখতে প্রথম গেছিলাম,তখন বায়োলজিতে সদ্য বিনাইন আর ম্যালিগন্যান্ট এর মত টার্ম পড়েছি।রীতিমত রক্তগরম,যাওয়ার পথে আমি তা জাহিরও করেছিলাম যদ্দুর মনে পড়ে।
সবচেয়ে ভালো লেগেছিলো জানলাগুলো,ওরা নিজের মত,ওরা যেন জানে না এ ঘরে জ্যোৎস্না নয়,প্রতিরাত্রে মৃত্যু ঢুকে পড়ে।টলমলে শরীর থেকে খুবলে খুবলে তুলে নেয় চোখ,নাক,গলার অ্যাডামস অ্যাপ্‌ল...। আর তারপর থেকে যায় ওই সাদা চাদর,যা প্রতিটা মৃত্যুর পর চাদর সেজে এসে শুয়ে পড়ে।এরকমই কোনো এক বিছানায় কবি  সুকান্ত হয়তবা প্রতিদিন লন্ড্রি থেকে ফিরে আসছে যক্ষার রক্ত ধুয়ে ফেলে।

এ গল্পে কেউই সুকান্ত হয়ে ওঠেনি,এরা নিতান্তই “আট নম্বর কাল মারা গ্যাছে”-র বাক্যেই সীমাবদ্ধ।তবু এদেরও একটা পরিচয় গড়ে ওঠে,অচেনা কোনো সুন্দরী বাস থেকে নেমে যাওয়ার আগে একবার ফিরে তাকালে যেমন হয়,তেমনটা।ভাইকে দেখতে গিয়ে আলাপও হয়েছিলো,এখন মনে পড়ে না।সাড়ে চারটের দুপুরে বাচ্চাগুলো সবুজ বাগানে আস্তে আস্তে হাঁপিয়ে উঠছিলো।
শিশিরের সাথে পিয়ালীর দ্যাখা যেদিন হয়েছিলো সেদিন শিশির পিয়ালীর অ্যাপিয়ারেন্সে সবার আগে যেটা লক্ষ করেছিলো তা হল গ্রীবা,দীর্ঘ গ্রীবা।চোয়ালের নীচ থেকে যেন একটা গোপন ঝরনা নেমে এসেছে।অথচ মজার ব্যাপার মাত্র দু’দিনের মধ্যেই জানতে পারল যে পিয়ালীর গলাতেই থাবা বসিয়েছে কর্কট।এবং ট্রান্সফার হতে হয় অন্য ডিপার্টমেন্টে। শিশির তারপর থেকে প্রতিদিন বিকেলের ওষুধের টাইমের আগে বাগানে আতিপাতি খুঁজেছে পিয়ালীকে,শেষমশ দেখতে পেলো ঠাকুরপুকুর ক্যান্সার হাসপাতালের মেইন বিল্ডিংটার ঠিক সামনে একটা যত্নের আতিশয্যে কিছুটা হেজে ওঠা পুলের সামনে। একদৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো জলের দিকে। ঠিক এরপরই শিশির এগিয়ে যেতে গিয়ে আস্তে আস্তে প্রায় মিলিয়ে গেছিলো পেভমেন্টে। আর জেগে উঠেছিলো পিয়ালীর থেকে মাত্র তিনহাত দূরে,এইবুঝি তার দ্বিতীয়বার জেগে ওঠা।এবার আফসোস হল এই যে তার ঠোঁটে ক্যান্সার হলে সে বুঝি বেঁচে যেত। গল্পে সমতা বজায় থাকত।কিন্তু আমি একটা চালাকি করেছি যাতে এটা গল্প না হয়ে ওঠে ক্যাটাগরিক্যালি তা আটকানোর জন্য, কলমটাকে দু’আঙুলের মাঝে ঢুকিয়ে বলেছি-যাও তো একটু ঘুরে এসো,সে নিজের মত ঘুরতে গ্যাছে,নিজের মত ঘুরছে,থুড়ি,লিখছে। নাহলে আমিও তো একটা টিটোয়েন্টি মহাকাব্য লিখতে চাই।

সেদিন বেডে ফিরে শিশির মনে মনে ভেবেছিলো-ধুর শালা,ক্যান্সার দিলি তো দিলি রক্তে দিলি না,মধ্যবিত্তর মহাব্বতে হলের ভিতরেই শুরু,হলের ভিতরেই শেষ।পরেরদিন নার্স এসে বলে যে এবারের মত তার ট্রিটমেন্ট শেষ,আজ তার ছুটি হবে।
সিনেমা হলে ব্যাকগ্রাউন্ডে একটা রক মিউজিক দেওয়া যেত,কিন্তু জীবন আক্ষরিকই কম্পোজিশনের সময় দেয় না।বিল্ডিং থেকে বেরোবার সময় সেই পুকুরটার সামনে দাঁড়িয়ে পিয়ালী একটা অবান্তর কথা বলেছিল। বলেছিলো
-‘আমার নাম পিয়ালী,আপনার নামটা জানতে চাই না, কিন্তু আপনার সাথে আর যেন দ্যাখা না হয়’।